?> পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা লাইন বাই লাইন - Ena School

পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা লাইন বাই লাইন

পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা লাইন বাই লাইন

ফররুখ আহমদের “পদ্মা” কবিতাটি নদীমাতৃক বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী পদ্মাকে ঘিরে রচিত। কবিতায় নদীর দুই বিপরীতমুখী রূপকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। মুূলভাব সহজে বুঝার জন্য পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা লাইন বাই লাইন করে দিলাম।

পদ্মা কবিতার ব্যাখ্যা

পঙক্তি ব্যাখ্যা
অনেক ঘূর্ণিতে ঘুরে, পেয়ে ঢের সমুদ্রের স্বাদ,পদ্মার প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণি এত শক্তিশালী যে তা বহু সমুদ্র ভ্রমণের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনীয়। এই উপমার মাধ্যমে নদীর ভয়ংকর রূপ বোঝানো হয়েছে।
জীবনের পথে পথে অভিজ্ঞতা কুড়ায়ে প্রচুর,পদ্মার দীর্ঘ যাত্রাপথে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল ও মানুষের জীবনে অসংখ্য অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়েছে। এটি নদীর বহমানতা ও জীবনকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা নির্দেশ করে।
কেঁপেছে তোমাকে দেখে জলদস্যু- দুরন্ত হার্মাদ,নদীর প্রমত্ত রূপ দেখে জলদস্যু ও হার্মাদদের মতো দুঃসাহসী ব্যক্তিরাও ভীত হয়েছে। এখানে পদ্মাকে ভয়ংকর প্রাকৃতিক শক্তি হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
তোমার তরঙ্গভঙ্গে বর্ণ তার হয়েছে পাণ্ডুর!পদ্মার প্রবল তরঙ্গের আঘাতে জলদস্যুদের বর্ণ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। এটি নদীর তীব্র শক্তি ও ধ্বংসাত্মক রূপের চিত্রকল্প।
সংগ্রামী মানুষ তবু দুই তীরে চালায়ে লাঙল,পদ্মার দুই পাড়ের মানুষ সংগ্রামী; তারা নদীর উর্বর পলিমাটিতে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে চাষাবাদ চালিয়ে যায়। এটি মানুষের অধ্যবসায় ও নদীর জীবনদায়িনী দিককে ইঙ্গিত করে।
কঠিন শ্রমের ফল – শস্য দানা পেয়েছে প্রচুর;পদ্মার পলিমাটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শস্য দান করে। নদীর এই রূপ তাকে কল্যাণময়ী করে তুলেছে।
উর্বর তোমার চরে ফলায়েছে পর্যাপ্ত ফসল!পদ্মার চরগুলো অত্যন্ত উর্বর, যেখানে মানুষ প্রচুর ফসল ফলিয়েছে। এটি নদীর সৃষ্টিশীল ও আশীর্বাদসূচক রূপ।
জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয়, নির্ভীক জওয়ান,পদ্মাকে ঘিরে মানুষ জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে অবিচল ও সাহসী থাকে। এখানে মানুষের সাহসিকতা ও প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রামের ইঙ্গিত রয়েছে।
সবুজের সমারোহে জীবনের পেয়েছে সম্বল।পদ্মার উর্বর পলিতে সবুজের সমারোহ সৃষ্টি হয়, যা মানুষের জীবনের পাথেয় ও সম্বল। এটি নদীর সৌন্দর্য ও জীবনীশক্তি প্রকাশ করে।
বর্ষায় তোমার স্রোতে গেছে ভেসে সাজানো বাগান,বর্ষাকালে পদ্মার জলস্রোত মানুষকে ধ্বংস করে; সাজানো বাগান, ঘরবাড়ি এমনকি জীবন পর্যন্ত ভেসে যায়। এটি নদীর ভয়ংকর ও ধ্বংসাত্মক দিক।
অসংখ্য জীবন, আর জীবনের অজস্র সম্ভার,পদ্মার প্লাবনে শুধু বস্তু নয়, মানুষের জীবনও বিলীন হয়ে যায়। এটি নদীর সর্বগ্রাসী রূপের চিত্র।
হে নদী! জেগেছে তবু পরিপূর্ণ আহ্বান,ধ্বংসাত্মক রূপের পরেও পদ্মা নবজীবনের আহ্বান জানায়। এটি নদীর পুনর্জীবনী শক্তির পরিচায়ক।
মৃত জড়তার বুকে খুলেছে মুক্তির স্বর্ণদ্বার,পদ্মার প্রবল স্রোত মানুষের জীবনে নতুন প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি করে। নদী যেন স্থবিরতাকে সরিয়ে মুক্তির দ্বার উন্মোচন করে।
তোমার সুতীব্র গতি; তোমার প্রদীপ্ত স্রোতধারা।পদ্মার তীব্র গতি এবং উজ্জ্বল স্রোতধারা জীবনের উচ্ছলতা ও নবজাগরণের প্রতীক। এটি পদ্মাকে শক্তি ও প্রেরণার উৎস হিসেবে চিত্রিত করে।

Related Posts

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top