শহীদ সাবের রচিত “খুদে গোয়েন্দার অভিযান” গল্পটি একটি চমৎকার রহস্য ও সাহসিকতার গল্প, যেখানে একটি ছোট্ট বালক খোকা তার সাহস ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে একটি বড় ধরনের ঘটনা সমাধান করে। নিচে খুদে গোয়েন্দার অভিযান মূলভাব ও বিষয়বস্তু দেয়া হল।
খুদে গোয়েন্দার অভিযান মূলভাব
শহীদ সাবেরের “খুদে গোয়েন্দার অভিযান” গল্পটি একটি মজাদার ও রহস্যপূর্ণ কাহিনী। একদিন সন্ধ্যায় স্কুল থেকে ফেরার পথে খোকা একটি অন্ধকার গলি দিয়ে হাঁটতে থাকে। হঠাৎ সে একটি বাড়ি থেকে হত্যার হুমকির শব্দ শুনে এবং জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে কিছু লোক একজন মানুষকে ঘিরে রেখেছে। তাদের একজন রিভলবার হাতে ধরে আছে এবং লোকটিকে দলিলে সই করতে বাধ্য করছে। খোকা ভয় পায়, কিন্তু সাহস করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে দেখে যে এটি আসলে একটি নাটকের মহড়া চলছিল, এবং সবাই অভিনেতা। খোকার ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি মজাদার হয়ে যায়। পুলিশ খোকার সাহসিকতার প্রশংসা করে, যদিও সে ভুল করেছিল। গল্পটি শিশুদের সাহস, বুদ্ধিমত্তা এবং সতর্কতার গুরুত্ব শেখায়, পাশাপাশি হাস্যরসের মাধ্যমে একটি মূল্যবান শিক্ষা দেয়।
খুদে গোয়েন্দার অভিযান বিষয়বস্তু
খোকা একটি স্কুলছাত্র। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সে একটি অন্ধকার গলি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। গলিটা বেশ ভয়ানক, কারণ সেখানে আলো কম। হঠাৎ সে একটি বাড়ি থেকে কিছু অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পায়। শব্দ শুনে খোকার মনে ভয় জাগে, কিন্তু তার মধ্যে কৌতূহলও কাজ করে। সে সেখানে কী হচ্ছে, তা জানার জন্য আস্তে আস্তে বাড়িটির কাছে যায়।
খোকা বাড়ির জানালার ফাঁক দিয়ে ভেতরে উঁকি মারে। সে দেখে যে বাড়ির ভেতরে কিছু লোক একজন মানুষকে ঘিরে রেখেছে। তাদের একজন রিভলবার হাতে ধরে আছে এবং সেই মানুষটিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। লোকটিকে তারা একটি দলিলে সই করতে বাধ্য করছে এবং বলছে, “আধঘণ্টার মধ্যে সই না করলে তোমাকে মেরে ফেলা হবে।”
খোকা ভয় পায়, কিন্তু তার মনে সাহস আসে। সে ভাবে, এই লোকটাকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু কীভাবে? খোকা নিজে ছোট, তাই সে স্থানীয় পুলিশকে সাহায্য চাইতে সিদ্ধান্ত নেয়।
খোকা দৌড়ে গিয়ে পুলিশকে সব ঘটনা বলে। পুলিশ অফিসার প্রথমে অবাক হয়, কিন্তু খোকার কথায় বিশ্বাস করে। তারা খোকার সাথে সেই বাড়িতে যায়। পুলিশ বাড়িতে ঢুকে দেখে যে সেখানে আসলে একটি নাটকের মহড়া চলছে! যাকে খোকা হত্যার হুমকি দেওয়া মনে করেছিল, সে আসলে একজন অভিনেতা। রিভলবারটি ছিল নাটকের প্রপস, এবং পুরো ঘটনাটি ছিল নাটকের একটি দৃশ্য।
পুলিশ এবং খোকা বুঝতে পারে যে এটা একটি ভুল বোঝাবুঝি। খোকা লজ্জা পায়, কিন্তু পুলিশ অফিসার তাকে সাহসের জন্য প্রশংসা করে। খোকা যদিও ভুল করেছিল, কিন্তু তার সাহস এবং দায়িত্ববোধ ছিল প্রশংসনীয়। গল্পটি শেষ হয় হাস্যরসের মাধ্যমে, যেখানে খোকার গোয়েন্দাগিরির স্বপ্ন এবং বাস্তবতার মধ্যে মজার পার্থক্য ফুটে উঠেছে।
এই গল্পের মাধ্যমে লেখক শহীদ সাবের দেখিয়েছেন যে ছোটরাও বড় কাজ করতে পারে, যদি তাদের মধ্যে সাহস ও দায়িত্ববোধ থাকে। খোকার চরিত্রটি শিশুদের মধ্যে সাহস, বুদ্ধিমত্তা এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগায়। এছাড়াও, গল্পটি পাঠকদের শেখায় যে কোনো ঘটনাকে সঠিকভাবে বুঝে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ দীক্ষা গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু – মোহাম্মদ নাসির আলী