গি দ্য মোপাসাঁ রচিত “দ্য নেকলেস” গল্পটি মধ্যবিত্ত জীবনের অসন্তোষ এবং অহেতুক উচ্চাকাঙ্ক্ষার পরিণতির এক করুণ চিত্র তুলে ধরে। গল্পের প্রধান চরিত্র মাদাম লোইসেল এমন এক নারী, যিনি তার সাদামাটা জীবনে কখনোই সন্তুষ্ট ছিলেন না। একাদশ-দ্বাদশ বাংলা বিষয়ের নেকলেস গল্পের বিষয়বস্তু ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
নেকলেস গল্পের বিষয়বস্তু
‘নেকলেস’ গল্পটির প্রধান চরিত্র মাদাম লোইসেল, একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তার জীবনে সাধারণতা থাকলেও, সে বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং দামী পোশাকের প্রতি আকৃষ্ট ছিল। তার স্বামী একজন সরকারি কর্মচারী, যার আয় কম। একদিন, তার স্বামী তাকে একটি দামী অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য একটি নতুন গাউন কিনে দেয়। কিন্তু মাদাম লোইসেল সন্তুষ্ট না হয়ে, একটি দামী নেকলেস ধার করে। অনুষ্ঠান থেকে ফিরে, সে দেখে নেকলেসটি হারিয়ে গেছে। তারা ঠিক করে নেকলেসটি বদলে দেওয়ার জন্য ঋণ নেবে এবং কষ্ট করে ঋণের টাকা শোধ করবে। এই সময়ে তারা দরিদ্র হয়ে পড়ে এবং জীবন হয়ে ওঠে কষ্টকর।
দশ বছর পর, অবশেষে যখন সমস্ত ঋণ শোধ হয়ে যায় এবং মাদাম লোইসেল তার ধনী বান্ধবী মাদাম ফরেস্টিয়ারের সঙ্গে দেখা করে, তখন তিনি জানতে পারেন যে ধার নেওয়া নেকলেসটি আসল হীরা নয়, বরং নকল ছিল। এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে অতৃপ্ত জীবন এবং বাহ্যিক চাকচিক্যের প্রতি অযথা লোভ মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
নেকলেস গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর
১. ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন লেখকের লেখা?
উত্তর: গি দ্য মোপাসাঁ।
২. ‘নেকলেস’ গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম কী?
উত্তর: মাদাম মাতিলদা লোইসেল।
৩. ‘নেকলেস’ গল্পটির অনুবাদকের নাম কি?
উত্তর: পূর্ণেন্দু দস্তিদার।
৪. পূর্ণেন্দু দস্তিদার কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৫. পূর্ণেন্দু দস্তিদার কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুন জন্মগ্রহণ করেন।
৬. পূর্ণেন্দু দস্তিদারের পিতার নাম কী?
উত্তর: পিতার নাম চন্দ্রকুমার দস্তিদার।
৭. পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাতার নাম কী?
উত্তর: মাতার নাম কুমুদিনী দস্তিদার।
৮. কোন বিদ্রোহে অংশ নেওয়ায় পূর্ণেন্দু দস্তিদার কারাবরণ করেন?
উত্তর: মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে।
৯. পূর্ণেন্দু দস্তিদার কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই মে মৃত্যুবরণ করেন।
১০. গী দ্য মোপাসাঁ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ফ্রান্সের নর্মান্ডি শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
১১. গী দ্য মোপাসাঁর পুরো নাম কী?
উত্তর: Henri-René-Albert-Guy de Maupassant।
১২. মোপাসাঁর পিতার নাম কী?
উত্তর: পিতার নাম গুস্তাভ দ্য মোপাসাঁ।
১৩. মোপাসাঁর মায়ের নাম কী?
উত্তর: মায়ের নাম লরা লি পয়টিভিন।
১৪. মোপাসাঁ কোন সালে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হন?
উত্তর: ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে।
১৫. মোপাসাঁর সাহিত্যজীবনে গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক কে ছিলেন?
উত্তর: বিখ্যাত ঔপন্যাসিক গুস্তাভ ফ্লবেয়ার।
১৬. গী দ্য মোপাসাঁ কখন মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই জুলাই।
১৭. ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ফরাসি পত্রিকা ‘La Gaulois’-এ।
১৮. ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন ভাষায় রচিত?
উত্তর: ফরাসি ভাষায়।
১৯. ‘নেকলেস’ গল্পটি ইংরেজিতে কখন অনূদিত হয়?
উত্তর: ১৮৮৪ সালে।
২০. স্যাটিন কী?
উত্তর: স্যাটিন হলো মসৃণ ও চকচকে রেশমি বস্ত্র।
২১. মাদাম লোইসেলের স্বামীর পেশা কী ছিল?
উত্তর: তিনি একজন সরকারি কেরানি ছিলেন।
২২. মাদাম লোইসেল কেন দুঃখী ছিলেন?
উত্তর: কারণ তিনি বিলাসিতা এবং আভিজাত্যের জীবনের আকাঙ্ক্ষা করতেন, যা তার অবস্থানে সম্ভব ছিল না।
২৩. মাদাম লোইসেলের স্বামী কি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন?
উত্তর: মন্ত্রীর বাসায় বল-নাচের আমন্ত্রণপত্র।
২৪. মাদাম লোইসেল বল-নাচে যেতে কেন আপত্তি করলেন?
উত্তর: কারণ তার কোনো মানানসই পোশাক ও গহনা ছিল না।
২৫. কনভেন্ট কী?
উত্তর: কনভেন্ট হলো খ্রিষ্টান নারী মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত স্কুল এবং মিশনারিদের আবাস।
২৬. ‘মাসিয়ে’ শব্দটি কী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: এটি ফ্রান্সে সৌজন্য প্রদর্শন ও সম্মান জানানোর জন্য পুরুষদের সম্বোধনে ব্যবহৃত হয়।
২৭. বল-নাচে যাওয়ার জন্য পোশাক কেনার জন্য স্বামী কত টাকা দিলেন?
উত্তর: চারশো ফ্রাঁ।
২৮. মাদাম লোইসেল গহনা কার থেকে নিলেন?
উত্তর: তার বান্ধবী মাদাম ফোরস্টিয়ারের কাছ থেকে।
২৯. বল-নাচে মাদাম লোইসেল কেমন ছিলেন?
উত্তর: তিনি ছিলেন সবচেয়ে সুন্দরী, সুরুচিসম্পন্ন ও আকর্ষণীয়।
৩০. ‘নেকলেস’ গল্পে নতুন হারটি কিনতে কত টাকা লাগল?
উত্তর: ৩৬ হাজার ফ্রাঁ।
৩১. ‘নেকলেস’ গল্পে হার কেনার টাকা কোথা থেকে আনা হয়?
উত্তর: কিছু সঞ্চিত অর্থ এবং বাকিটা ধার করে।
৩২. প্যালেস রয়েল কী?
উত্তর: প্যালেস রয়েল হলো একটি রাজকীয় প্রাসাদ।
৩৩. মাদাম ফোরস্টিয়ার হার ফেরত নেওয়ার সময় কী বললেন?
উত্তর: “ওটা আরও আগে ফেরত দেওয়া উচিত ছিল, কারণ তা আমার দরকার হতে পারত।”
৩৪. ‘নেকলেস’ গল্পে হার কেনার পর তাদের জীবন কেমন ছিল?
উত্তর: তারা দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটাতে বাধ্য হয়।
৩৫. প্যারী কী?
উত্তর: প্যারী হলো প্যারিসের ফরাসি নাম।
৩৬. মাদাম লোইসেল কী ধরনের কাজ করতে শিখলেন?
উত্তর: ঘর পরিষ্কার, বাসন মাজা, রান্না করা, কাপড় ধোয়া ইত্যাদি।
৩৭. ‘নেকলেস’ গল্পে হারের টাকা শোধ করতে কত বছর লাগে?
উত্তর: দশ বছর।
৩৮. দশ বছর পরে মাদাম ফোরস্টিয়ারের সঙ্গে মাদাম লোইসেলের দেখা হয় কোথায়?
উত্তর: রাস্তায়।
৩৯. মাদাম লোইসেল মাদাম ফোরস্টিয়ারকে কী জানান?
উত্তর: যে তারা হারটির বদলে একটি নতুন হার কিনে দিয়েছিল।
৪০. ক্রুশ কিসের প্রতীক?
উত্তর: ক্রুশ হলো খ্রিষ্টান ধর্মীয় প্রতীক।
৪১. মাদাম ফোরস্টিয়ার নকল হারটির দাম কত ছিল?
উত্তর: নকল হারটির দাম ৫০০ ফ্রাঁর বেশি ছিল না।
৪২. ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন দেশের প্রেক্ষাপটে রচিত?
উত্তর: ফ্রান্স।
৪৩. ‘নেকলেস’ গল্পটি গল্পের মূল বিষয় কী?
উত্তর: মানুষের অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও মিথ্যে অহমিকা জীবনে দুঃখ বয়ে আনতে পারে।
৪৪. মাদাম লোইসেলের স্বামীর চরিত্র কেমন ছিল?
উত্তর: তিনি ছিলেন সহানুভূতিশীল ও ত্যাগী।
৪৫. মাদাম লোইসেলের বান্ধবী মাদাম ফোরস্টিয়ারের চরিত্র কেমন?
উত্তর: বন্ধুসুলভ ও উদার।
৪৬. হারটি হারানোর পর তাদের প্রথম পদক্ষেপ কী ছিল?
উত্তর: হারটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা।
৪৭. ‘নেকলেস’ গল্পটির মাধ্যমে কী শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও মিথ্যে অহমিকা মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৪৮. গল্পের শেষে মাদাম লোইসেলের কী অনুভূতি ছিল?
উত্তর: অনুশোচনা ও হতাশা।
৪৯. ‘মাদাম’ শব্দটি কাকে উদ্দেশ্য করে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: এটি ফ্রান্সে সৌজন্য প্রদর্শন ও সম্মান জানানোর জন্য মহিলাদের সম্বোধনে ব্যবহৃত হয়।
৫০. ফ্রাঁ’ কী?
উত্তর: ফ্রাঁ’ হলো ফ্রান্সের মুদ্রার নাম, যা ২০০২ সাল পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
৫১. ফ্রাঁ’র পরিবর্তে বর্তমানে ফ্রান্স কী ব্যবহার করে?
উত্তর: ফ্রাঁ’র পরিবর্তে বর্তমানে ফ্রান্স ইউরো ব্যবহার করে।