সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘প্রবাস বন্ধু’ গল্পে লেখক তার আফগানিস্তানে থাকার অভিজ্ঞতা এবং সেখানকার সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও মানুষের জীবনযাপন নিয়ে মজাদার ও প্রাণবন্ত বর্ণনা দিয়েছেন। নিচে প্রবাস বন্ধু গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু – সৈয়দ মুজতবা আলী দেয়া হল।
প্রবাস বন্ধু গল্পের মূলভাব
গল্পের লেখক আফগানিস্তানের কাবুল শহরে যান। সেখানে তিনি আবদুর রহমান নামের একজন চাকর পান, যার চেহারা ভয়ানক কিন্তু কাজে খুব দক্ষ। আবদুর রহমান লেখকের সব কাজ করে, বিশেষ করে রান্নায় তার জুড়ি নেই। সে পোলাও, কোরমা, কাবাব, এমনকি ফালুদাও বানাতে পারে। ফালুদা বানানোর জন্য বরফের প্রয়োজন হয়, এবং আবদুর রহমান লেখককে জানায় যে পাহাড় থেকে বরফ আনা হয়, যা শীতকালে জমিয়ে রাখা হয়।
গল্পের মধ্যে আবদুর রহমানের সাথে লেখকের মজার কথোপকথন চলে। আবদুর রহমান লেখককে আফগানিস্তানের শীতকালের বর্ণনা দেয়, বিশেষ করে পানশির অঞ্চলের কথা বলে। সে বলে যে সেখানে শীতকালে এত বরফ পড়ে যে সবকিছু ঢেকে যায়, এবং মানুষজন বাড়িতে বসে থাকে। লেখক মজা করে বলেন যে যদি আবদুর রহমান শীতকালে পানশিরে চলে যায়, তাহলে তার রান্না কে করবে? এই বলে গল্পটি শেষ হয়।
প্রবাস বন্ধু গল্পের বিষয়বস্তু
গল্পের কথক (যিনি লেখক নিজেই) আফগানিস্তানের কাবুল শহরে যান। সেখানে তিনি কাবুল থেকে আড়াই মাইল দূরে খাজামোল্লা নামের একটি গ্রামে থাকার জায়গা পান। তার সাথে একজন চাকরও জুটে যায়, যার নাম আবদুর রহমান। আবদুর রহমানকে লেখকের পরিচয় করিয়ে দেয় তার বস মশিয়ে জিরা, যিনি একজন ফরাসি অধ্যক্ষ। জিরা বলেন যে আবদুর রহমান লেখকের সব কাজ করে দেবে, জুতো পালিশ থেকে শুরু করে রান্নাবান্না পর্যন্ত।
আবদুর রহমান দেখতে বেশ বড়সড় এবং শক্তিশালী। তার উচ্চতা ছয় ফুট চার ইঞ্চি, এবং তার শরীর এতটাই চওড়া যে মনে হয় সে যেন গোটা আফগানিস্তানের ভার বইতে পারে। তার হাত-পা লম্বা, মুখ বড়, এবং চেহারা একটু ভয়ানক ধরনের। কিন্তু কাজে সে খুব দক্ষ এবং বিশ্বস্ত। লেখক প্রথমে আবদুর রহমানের চেহারা দেখে একটু ভয় পেলেও, তার কাজের প্রতি আস্থা রাখেন।
আবদুর রহমান লেখকের সব কাজ করে দেয়। সে রান্না করে, বাজার করে, এবং লেখকের যত্ন নেয়। লেখক প্রথমে ভাবেন যে আবদুর রহমান হয়তো রান্নায় তেমন পারদর্শী নয়, কিন্তু যখন আবদুর রহমান একের পর এক সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করতে থাকে, তখন লেখক বুঝতে পারেন যে সে আসলে রান্নায় খুব পটু। সে পোলাও, কোরমা, কাবাব, এমনকি ফালুদাও বানাতে পারে। ফালুদা বানানোর জন্য বরফের প্রয়োজন হয়, এবং আবদুর রহমান লেখককে জানায় যে পাহাড় থেকে বরফ আনা হয়, যা শীতকালে জমিয়ে রাখা হয়।
গল্পের মধ্যে আবদুর রহমানের সাথে লেখকের মজার কথোপকথন চলে। আবদুর রহমান লেখককে আফগানিস্তানের শীতকালের বর্ণনা দেয়, বিশেষ করে পানশির অঞ্চলের কথা বলে। সে বলে যে সেখানে শীতকালে এত বরফ পড়ে যে সবকিছু ঢেকে যায়, এবং মানুষজন বাড়িতে বসে থাকে। আবদুর রহমানের বর্ণনা এতই জীবন্ত যে লেখক শীতকালে পানশিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
গল্পের শেষে আবদুর রহমানের সাথে লেখকের হাস্যরসময় আলাপ হয়। লেখক জোক করে বলেন যে যদি আবদুর রহমান শীতকালে পানশিরে চলে যায়, তাহলে তার রান্না কে করবে? এই বলে গল্পটি শেষ হয়।