ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “ফুলের বিবাহ” গল্পটি প্রকৃতির মধ্যে ফুল, গাছ এবং পোকামাকড়দের মানুষের মতো চরিত্রে সাজিয়ে লেখা হয়েছে। গল্পটি মজার এবং কল্পনাপ্রবণ, যেখানে ফুলের বিয়ের আয়োজন করা হয়। নিচে ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু দেওয়া হল।

ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “ফুলের বিবাহ” গল্পটি একটি মজার এবং কল্পনাপ্রবণ রচনা, যেখানে ফুল, গাছ এবং পোকামাকড়রা মানুষের মতো আচরণ করে। গল্পে মল্লিকা ফুলের বিয়ের আয়োজন করা হয়, এবং ভ্রমর (মৌমাছি) ঘটকের ভূমিকায় আসে। গোলাপ ফুলকে বর হিসেবে নির্বাচন করা হয়, এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ফুল ও প্রাণীরা অংশগ্রহণ করে। কোকিল গান গায়, খদ্যোত (জোনাকি) আলো জ্বালায়, এবং মৌমাছিরা সানাই বাজায়। জবা, চাঁপা, গন্ধরাজ প্রভৃতি ফুল বরযাত্রী হিসেবে আসে, এবং বিয়ের অনুষ্ঠান খুব জমজমাট হয়। গল্পের শেষে দেখা যায়, এই পুরো ঘটনা একজন মানুষের স্বপ্নের মতো, যা প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের আনন্দকে ফুটিয়ে তোলে। গল্পটি পাঠককে কল্পনার জগতে নিয়ে যায় এবং প্রকৃতির মাধুর্য উপভোগ করতে শেখায়।

ফুলের বিবাহ গল্পের বিষয়বস্তু

গল্পের শুরুতে দেখা যায়, মল্লিকা ফুল (একটি ছোট ফুল) বিয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। মল্লিকার বাবা একটি ছোট গাছ, যার অনেক কন্যা (অনেক ফুল) রয়েছে। মল্লিকার বিয়ের জন্য বিভিন্ন ফুলের সাথে আলোচনা চলছে, কিন্তু কোনো সম্বন্ধ ঠিক হয় না। যেমন:

  • স্থলপদ্ম: সে খুব উঁচু বংশের, তাই মল্লিকার সাথে বিয়েতে রাজি নয়।
  • জবা ফুল: সে রাগী স্বভাবের, তাই মল্লিকার বাবা এই সম্বন্ধে আগ্রহী নন।
  • গন্ধরাজ: সে খুব গর্বিত, তাই তার সাথে সম্বন্ধ হয় না।

এমন সময় ভ্রমর (মৌমাছি) ঘটক হিসেবে আসে এবং মল্লিকার বিয়ের ব্যবস্থা করতে চায়। ভ্রমর মল্লিকার গুণের প্রশংসা করে এবং গোলাপ ফুলকে বর হিসেবে প্রস্তাব করে। গোলাপ রাজি হয়, এবং বিয়ের আয়োজন শুরু হয়।


বিয়ের আয়োজন:

বিয়ের দিন, গোলাপ এবং তার বরযাত্রীরা (অন্যান্য ফুল এবং পোকামাকড়) মল্লিকার বাড়িতে আসে। বিয়ের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ফুল এবং প্রাণীরা অংশগ্রহণ করে:

  • কোকিল গান গায়।
  • খদ্যোত (জোনাকি পোকা) আলো জ্বালায়।
  • মৌমাছিরা সানাই বাজায়।
  • জবা, চাঁপা, গন্ধরাজ ইত্যাদি ফুলেরা বরযাত্রী হিসেবে আসে।

বিয়ের অনুষ্ঠান খুব জমজমাট হয়। মল্লিকা এবং গোলাপের বিয়ে সম্পন্ন হয়, এবং সবাই আনন্দে মেতে ওঠে।


গল্পের শেষ:

গল্পের শেষে দেখা যায়, এই পুরো ঘটনা একজন মানুষের চোখে দেখা একটি স্বপ্নের মতো। সে দেখে, ফুলেরা সবাই মানুষের মতো আচরণ করছে, কিন্তু যখন সে জেগে ওঠে, তখন সব কিছুই স্বপ্ন বলে মনে হয়। তার ছোট ভাইঝি কুসুম তাকে জাগিয়ে দেয় এবং বলে যে সে ফুল দিয়ে মালা গেঁথেছে। তখন সে বুঝতে পারে যে, ফুলের বিয়ের গল্পটি তার কল্পনা ছিল, কিন্তু প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং ফুলের মাধুর্য সত্যিই অসাধারণ।

আরও পড়ুনঃ অভাগীর স্বর্গ গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

Related Posts

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top