রেইনকোট গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

রেইনকোট গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের “রেইনকোট” গল্পটি সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে লেখা হয়। নিচে রেইনকোট গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু দেওয়া হল।

রেইনকোট গল্পের মূলভাব

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের “রেইনকোট” গল্পটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত, যেখানে নুরুল হুদা নামের একজন কলেজ লেকচারারকে কেন্দ্র করে কাহিনী আবর্তিত হয়। ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে, এবং নুরুল তার শ্যালক মিন্টুর রেইনকোট পরে কলেজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। মিন্টু মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে, এবং তার রেইনকোটটি নুরুলের জন্য সান্ত্বনা ও নিরাপত্তার প্রতীক হয়ে ওঠে। কলেজে পৌঁছে নুরুল জানতে পারে, কলেজের দেওয়ালে বোমা ফেলা হয়েছে, এবং মিলিটারি তদন্ত করছে। প্রিনসিপ্যাল তাকে ডেকে পাঠায়, এবং মিলিটারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। নুরুল বারবার বলে, সে নির্দোষ, কিন্তু মিলিটারি তার কথা বিশ্বাস করে না। তারা তাকে মারধর করে, চাবুক দিয়ে পিটায়, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আস্তানার কথা জানতে চায়। নুরুল কিছুই জানে না, কিন্তু মিলিটারির অত্যাচারের মুখে সে ভাবে, যদি সে কিছু বলে, তাহলে হয়তো তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। মিলিটারির চাবুকের আঘাত সহ্য করতে করতে নুরুলের শরীর ও মন ভেঙে পড়ে, কিন্তু তার মনে হয়, সে মিন্টুর রেইনকোটের ওম অনুভব করছে, যা তাকে কিছুটা শক্তি ও সান্ত্বনা দেয়। গল্পটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সাধারণ মানুষের ভয়, অনিশ্চয়তা, এবং মানসিক সংগ্রামের একটি শক্তিশালী চিত্র তুলে ধরে।

রেইনকোট গল্পের বিষয়বস্তু

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের “রেইনকোট” গল্পটি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা।

গল্পটি শুরু হয় বৃষ্টির বর্ণনা দিয়ে। ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। নুরুল হুদা, একজন কলেজ লেকচারার, তার শ্যালক মিন্টুর রেইনকোট পরে কলেজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। মিন্টু মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে, এবং তার রেইনকোটটি নুরুলের জন্য একটি সান্ত্বনার প্রতীক হয়ে ওঠে। বৃষ্টির মধ্যে রেইনকোট পরে সে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়।

কলেজে যাওয়ার পথে নুরুল দেখে, মিলিটারি সব জায়গায় নজরদারি করছে। সে ভাবে, মিলিটারি তাকে সন্দেহ করবে না, কারণ সে একজন সাধারণ শিক্ষক। কিন্তু মিলিটারির ভয়ে সে সবসময় টেনশনে থাকে। কলেজে পৌঁছে সে জানতে পারে, কলেজের দেওয়ালে বোমা ফেলা হয়েছে, এবং মিলিটারি তদন্ত করছে। প্রিনসিপ্যাল তাকে ডেকে পাঠায় এবং বলে, মিলিটারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।

নুরুল হুদা মিলিটারির হাতে ধরা পড়ে। মিলিটারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ আছে কিনা। নুরুল বারবার বলে, সে নির্দোষ, কিন্তু মিলিটারি তার কথা বিশ্বাস করে না। তারা তাকে মারধর করে, চাবুক দিয়ে পিটায়। নুরুলের শরীরে ব্যাথা হয়, কিন্তু তার মনে হয়, সে মিন্টুর রেইনকোটের ওম অনুভব করছে, যা তাকে কিছুটা সান্ত্বনা দেয়।

মিলিটারি তাকে চাপ দেয়, মুক্তিযোদ্ধাদের আস্তানার কথা বলতে। নুরুল কিছুই জানে না, কিন্তু মিলিটারির অত্যাচারের মুখে সে ভাবে, যদি সে কিছু বলে, তাহলে হয়তো তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরও সে কিছুই বলতে পারে না। মিলিটারি তাকে আরও মারধর করে, এবং নুরুলের শরীর ও মন ভেঙে পড়ে।

গল্পের শেষে, নুরুল হুদা মিলিটারির চাবুকের আঘাত সহ্য করতে থাকে, কিন্তু তার মনে হয়, সে মিন্টুর রেইনকোটের ওম অনুভব করছে। এই ওম তাকে কিছুটা শক্তি দেয়, এবং সে ভাবে, সে বেঁচে থাকবে, যুদ্ধের এই কঠিন সময় পার করবে।

“রেইনকোট” গল্পটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সাধারণ মানুষের ভয়, অনিশ্চয়তা, এবং মানসিক সংগ্রামের একটি শক্তিশালী চিত্র। নুরুল হুদার চরিত্রের মাধ্যমে লেখক দেখান, কিভাবে যুদ্ধের সময় মানুষ ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বেঁচে থাকে।

আরও পড়ুনঃ মাসি পিসি গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

Related Posts

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top