সেই ছেলেটি নাটকের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

মামুনুর রশীদের “সেই ছেলেটি” নাটকটি তিনটি দৃশ্যে বিভক্ত, যেখানে আরজু নামের একটি ছেলের শারীরিক সমস্যা এবং তার বন্ধু ও শিক্ষকের সাথে সম্পর্কের দিকগুলো ফুটে উঠেছে। নিচে সেই ছেলেটি নাটকের মূলভাব ও বিষয়বস্তু দেওয়া হল।

সেই ছেলেটি নাটকের মূলভাব

মামুনুর রশীদের “সেই ছেলেটি” নাটকটি আরজু নামের একটি ছেলের জীবন নিয়ে, যার পায়ে ব্যথার কারণে স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে আরজু হঠাৎ থেমে যায় এবং বন্ধু সোমেন ও সাবু তাকে ফেলে চলে যায়। আরজু একা বসে থাকার সময় একজন আইসক্রিমওয়ালা ও হাওয়াই মিঠাইওয়ালার সাথে তার কথা হয়, কিন্তু তারা তাকে সাহায্য করে না। স্কুলে লতিফ স্যার আরজুর অনুপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত হন এবং তার বন্ধুদের সাথে তাকে খুঁজতে বের হন। তারা আরজুকে আমবাগানের কাছে একা বসে থাকতে দেখে। আরজু কাঁদতে কাঁদতে লতিফ স্যারকে তার পায়ের ব্যথার কথা বলে, যা একটি রোগের কারণে হয়েছে। লতিফ স্যার আরজুকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সোমেন ও সাবু তাকে কাঁধে করে স্কুলে নিয়ে যায়। নাটকটি বন্ধুত্ব, সহানুভূতি এবং দায়িত্ববোধের গুরুত্ব শেখায়, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে সমস্যায় পড়া মানুষকে সাহায্য করা আমাদের কর্তব্য।

সেই ছেলেটি নাটকের বিষয়বস্তু

১ম দৃশ্য:

আরজু, সোমেন এবং সাবু একসাথে স্কুলে যাচ্ছে। হঠাৎ আরজুর পায়ে ব্যথা হয়, এবং সে হাঁটতে পারে না। সোমেন এবং সাবু তাকে ফেলে চলে যায়, কারণ তারা স্কুলে দেরি করতে চায় না। সাবু একটু পরে ফিরে এসে আরজুকে জিজ্ঞেস করে, “কী হয়েছে?” আরজু বলে, “আমি আর হাঁটতে পারছি না।” সাবু তাকে ফেলে আবার চলে যায়।

আরজু একা বসে থাকে। তখন একজন আইসক্রিমওয়ালা আসে এবং আরজুকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি স্কুলে যাচ্ছ না কেন?” আরজু বলে, “আমি হাঁটতে পারছি না।” আইসক্রিমওয়ালা তাকে উপদেশ দেয়, “স্কুলে যাও, লেখাপড়া করো, নাহলে আমার মতো আইসক্রিম বিক্রি করতে হবে।” কিন্তু আরজু স্কুলে যেতে পারে না।

এরপর একজন হাওয়াই মিঠাইওয়ালা আসে। আরজু তাকে ডাকে, কিন্তু মিঠাইওয়ালা তাকে সময় দিতে চায় না। আরজু একা বসে ভাবে, “এখন আমি কী করব? বাড়ি গেলে বাবা বলবে স্কুল ফাঁকি দিয়েছি, স্কুলে গেলে স্যার বলবে দাঁড়িয়ে থাকো।”


২য় দৃশ্য:

স্কুলে টিফিনের সময়। সোমেন, সাবু এবং অন্যান্য ছেলেমেয়েরা খেলছে। লতিফ স্যার এসে জিজ্ঞেস করেন, “আরজু কোথায়?” সাবু বলে, “সে মাঝপথে থেমে গিয়েছিল।” লতিফ স্যার আরজুর সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হন। তিনি বুঝতে পারেন যে আরজুর কোনো শারীরিক সমস্যা আছে।

লতিফ স্যার সোমেন এবং সাবুকে নিয়ে আরজুকে খুঁজতে বের হন। তারা জানতে পারে যে আরজু আমবাগানের কাছে বসে আছে।


৩য় দৃশ্য:

আরজু আমবাগানে একা বসে আছে। সে পাখি এবং মেঘের সাথে কথা বলে, “তোমরা আমাকে স্কুলে নিয়ে যাও।” সে কাঁদতে থাকে, কারণ কেউ তাকে সাহায্য করে না।

হঠাৎ লতিফ স্যার, সোমেন এবং সাবু সেখানে আসে। লতিফ স্যার আরজুকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কাঁদছ কেন?” আরজু বলে, “স্যার, আমার পায়ে ব্যথা হয়, আমি বেশি দূর হাঁটতে পারি না।” লতিফ স্যার বুঝতে পারেন যে আরজুর পা চিকন হয়ে গেছে, এবং এটি একটি রোগ।

লতিফ স্যার আরজুকে বলেন, “চিন্তা করো না, আমরা তোমাকে সাহায্য করব।” সোমেন এবং সাবু আরজুকে কাঁধে করে স্কুলে নিয়ে যায়। লতিফ স্যার বলেন, “আমরা তোমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।”

Related Posts

Leave a Comment