সততার পুরস্কার গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু

‘সততার পুরস্কার’ গল্পটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। গল্পে তিনজন লোকের কথা বলা হয়েছে—একজন ধবলরোগী, একজন টাকওয়ালা এবং একজন অন্ধ। আল্লাহ তাদের পরীক্ষার জন্য একজন ফেরেশতা পাঠান। নিচে সততার পুরস্কার গল্পের মূলভাব ও বিষয়বস্তু দেওয়া হল।

সততার পুরস্কার গল্পের মূলভাব

এক সময় আরব দেশে তিনজন লোক ছিল: একজন সাদা চামড়ার রোগী, একজন টাক মাথার এবং একজন অন্ধ। আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করতে একজন ফেরেশতাকে পাঠালেন। ফেরেশতা মানুষের রূপে প্রথমে সাদা চামড়ার রোগীর কাছে গিয়ে তাকে সুস্থ করে দিলেন এবং একটি উট দিলেন। তারপর টাক মাথার লোকটির কাছে গেলেন এবং তার চুল ফিরিয়ে দিলেন এবং একটি গাভি দিলেন। শেষে অন্ধ লোকটির চোখ ভালো করে দিলেন এবং একটি ছাগল দিলেন। কিছুদিন পর তাদের সবাই ধনী হয়ে গেল। পরে ফেরেশতা আবার তাদের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলেন। প্রথম দুইজন তাদের সম্পদ দিতে অস্বীকার করল এবং মিথ্যা বলল। কিন্তু অন্ধ লোকটি সত্য বলল এবং সাহায্য করতে রাজি হল। ফেরেশতা বললেন, “আল্লাহ তোমার উপর খুশি হয়েছেন, কিন্তু অন্য দুজনকে তিনি অসন্তুষ্ট করেছেন।”

সততার পুরস্কার গল্পের বিষয়বস্তু

এক সময় আরব দেশে তিনজন লোক ছিল। তাদের একজন ছিল সাদা চামড়ার রোগে আক্রান্ত (ধবলরোগী), একজন ছিল টাক মাথার, আর একজন ছিল অন্ধ। আল্লাহ তাদের পরীক্ষা করার জন্য একজন ফেরেশতাকে পাঠালেন। ফেরেশতা মানুষের রূপ ধরে প্রথমে সাদা চামড়ার রোগীর কাছে গেলেন।

ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করলেন: “তুমি সবচেয়ে কী চাও?”
রোগী বলল: “আমার গায়ের রঙ যদি ভালো হয়! সবাই আমাকে ঘৃণা করে।”
ফেরেশতা তার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলেন, এবং তার রোগ সেরে গেল। তার গায়ের রঙ সুন্দর হয়ে গেল।
ফেরেশতা আবার জিজ্ঞাসা করলেন: “এখন তুমি কী চাও?”
সে বলল: “আমি একটি উট চাই।”
ফেরেশতা তাকে একটি গর্ভবতী উট দিলেন এবং বললেন, “এই নাও, এটা তোমার ভাগ্য খুলে দেবে।”

এরপর ফেরেশতা টাক মাথার লোকটির কাছে গেলেন।
ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করলেন: “তুমি সবচেয়ে কী চাও?”
সে বলল: “আমার মাথায় যদি চুল গজায়! এই টাক নিয়ে আমি খুব কষ্ট পাই।”
ফেরেশতা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন, এবং তার মাথায় চুল গজিয়ে গেল।
ফেরেশতা আবার জিজ্ঞাসা করলেন: “এখন তুমি কী চাও?”
সে বলল: “আমি একটি গাভি চাই।”
ফেরেশতা তাকে একটি গর্ভবতী গাভি দিলেন এবং বললেন, “এই নাও, এটা তোমার ভাগ্য খুলে দেবে।”

তারপর ফেরেশতা অন্ধ লোকটির কাছে গেলেন।
ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করলেন: “তুমি সবচেয়ে কী চাও?”
সে বলল: “আমার চোখ যদি ভালো হয়! আমি মানুষের মুখ দেখতে চাই।”
ফেরেশতা তার চোখে হাত বুলিয়ে দিলেন, এবং তার চোখ ভালো হয়ে গেল।
ফেরেশতা আবার জিজ্ঞাসা করলেন: “এখন তুমি কী চাও?”
সে বলল: “আমি একটি ছাগল চাই।”
ফেরেশতা তাকে একটি গর্ভবতী ছাগল দিলেন এবং বললেন, “এই নাও, এটা তোমার ভাগ্য খুলে দেবে।”

কিছুদিন পর, তিনজনেরই উট, গাভি এবং ছাগলের বাচ্চা হলো। তাদের সম্পদ বেড়ে গেল, এবং তারা ধনী হয়ে গেল।

এরপর ফেরেশতা আবার মানুষের রূপ ধরে প্রথম লোকটির (যার সাদা চামড়ার রোগ ছিল) কাছে গেলেন।
ফেরেশতা বললেন: “আমি একজন বিদেশি। আমার সব টাকা ফুরিয়ে গেছে। আল্লাহর দোহাই দিয়ে তোমার কাছে একটি উট চাইছি, যাতে আমি দেশে ফিরতে পারি।”
সে বলল: “উটের দাম অনেক, আমি কীভাবে দেব?”
ফেরেশতা বললেন: “তুমি কি ভুলে গেছ? তুমি তো আগে সাদা চামড়ার রোগী ছিলে, আর গরিব ছিলে। আল্লাহ তোমাকে সুস্থ করে ধনী করেছেন।”
সে বলল: “না, এসব তো আমারই ছিল।”
ফেরেশতা বললেন: “যদি তুমি মিথ্যা বলো, তবে আল্লাহ তোমাকে আবার আগের মতো করে দেবেন।”

এরপর ফেরেশতা টাক মাথার লোকটির কাছে গেলেন এবং একটি গাভি চাইলেন। সেও কিছু দিল না। ফেরেশতা তাকেও একই সতর্কবার্তা দিলেন।

শেষে ফেরেশতা অন্ধ লোকটির কাছে গেলেন এবং একটি ছাগল চাইলেন।
অন্ধ লোকটি বলল: “হ্যাঁ, আমি অন্ধ ছিলাম, আল্লাহ আমাকে চোখ দিয়েছেন। আমি গরিব ছিলাম, তিনি আমাকে ধনী করেছেন। তুমি যা চাও, নিয়ে যাও। আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে ভালো মানুষ বলব না যদি তুমি আল্লাহর জন্য কিছু না নাও।”
ফেরেশতা বললেন: “তোমার জিনিস তোমারই থাক। আল্লাহ তোমার উপর খুশি হয়েছেন, কিন্তু অন্য দুজনকে তিনি অসন্তুষ্ট করেছেন।”

Related Posts

Leave a Comment