আঠারো বছর বয়স কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা

সুকান্ত ভট্টাচার্যের “আঠারো বছর বয়স” কবিতাটি যৌবনের আবেগ, সাহস, সংগ্রাম এবং দায়িত্ববোধকে খুব সহজ এবং প্রাণবন্তভাবে ফুটিয়ে তোলে। নিচে আঠারো বছর বয়স কবিতার মূলভাব ও ব্যাখ্যা দেওয়া হল।

আঠারো বছর বয়স কবিতার মূলভাব

এই কবিতাটি আঠারো বছর বয়সের তরুণ-তরুণীদের কথা বলে।এই বয়সে তরুণরা খুব সাহসী হয়, তারা কোনো ভয় পায় না। তারা জীবনের বাধা-বিপত্তিকে পদাঘাত করে এগিয়ে যেতে চায়। তাদের মনে নানা রকম দুঃসাহসী স্বপ্ন এবং কল্পনা জাগে। এই বয়সে তরুণরা খুব আবেগপ্রবণ হয়। তারা দেশ ও মানবতার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকে। তারা রক্তদান করতে, সংগ্রাম করতে এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু এই বয়সে শুধু সাহস এবং উচ্ছ্বাসই থাকে না, এ সময়ে অনেক কষ্ট এবং যন্ত্রণাও থাকে। সমাজের নানা সমস্যা, অন্যায় এবং বৈষম্য দেখে তরুণরা খুব কষ্ট পায়।

তবুও, এই বয়সে তরুণরা হাল ছাড়ে না। তারা জীবনের সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে চায়। তারা নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সংগ্রাম করে। কবি চান যে, এই তরুণদের সাহস এবং শক্তি দেশের উন্নতি এবং প্রগতির জন্য কাজ করুক।

আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা

কবিতার লাইনব্যাখ্যা
“আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ”
আঠারো বছর বয়সটি খুব কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং একটি সময়। এই বয়সে তরুণ-তরুণীরা কৈশোর থেকে যৌবনে প্রবেশ করে। 
“স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি”এই বয়সে তরুণরা খুব সাহসী হয়। তারা সমাজের নিয়ম, বাধা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ঝুঁকি নেয়।
“আঠারো বছর বয়সেই অহরহ
বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি”
এই বয়সে তরুণদের মনে নানা রকম সাহসী এবং দুঃসাহসী স্বপ্ন জাগে। তারা বড় বড় লক্ষ্য এবং স্বপ্ন দেখে, যা তাদেরকে নতুন কিছু করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
 “আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়”এই বয়সে তরুণরা কোনো ভয় পায় না। তারা জীবনের সব বাধা-বিপত্তিকে সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে চায়। তাদের মনে কোনো সংশয় বা ভীতি থাকে না।
“পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা”তরুণরা জীবনের সব বাধাকে পদদলিত করে এগিয়ে যেতে চায়। তারা কোনো সমস্যাকে ভয় পায় না, বরং তা অতিক্রম করার জন্য সংগ্রাম করে।
“এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়”এই বয়সে তরুণরা কারো কাছে মাথা নোয়ায় না। তারা অন্যায় এবং অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং স্বাধীনভাবে চলতে চায়।
“আঠারো বছর বয়স জানে না কাঁদা”এই বয়সে তরুণরা খুব আত্মবিশ্বাসী হয়। তারা শৈশবের কান্না এবং ভয়কে পেছনে ফেলে দেয়। তারা জীবনের সমস্যাগুলোকে সাহসের সাথে মোকাবিলা করে।
“এ বয়স জানে রক্তদানের পুণ্য”এই বয়সে তরুণরা দেশ, সমাজ এবং মানবতার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকে। তারা রক্তদান করে, সংগ্রাম করে এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চায়।
“বাষ্পের বেগে স্টিমারের মতো চলে”তরুণরা খুব দ্রুত এবং উদ্যমের সাথে এগিয়ে যায়, ঠিক যেমন একটি স্টিমার জলের উপর দ্রুতগতিতে চলে। তাদের মধ্যে প্রচুর শক্তি এবং উদ্দীপনা থাকে।
“প্রাণ দেওয়া-নেওয়া ঝুলিটা থাকে না শূন্য”তরুণরা তাদের জীবনকে নতুন লক্ষ্য এবং শপথের জন্য উৎসর্গ করে। তারা সমাজের জন্য কিছু করার প্রতিজ্ঞা করে এবং সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।
“সঁপে আত্মাকে শপথের কোলাহলে”তরুণরা তাদের জীবনকে নতুন লক্ষ্য এবং শপথের জন্য উৎসর্গ করে। তারা সমাজের জন্য কিছু করার প্রতিজ্ঞা করে এবং সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।
“আঠারো বছর বয়স ভয়ংকর”এই বয়সটি খুব শক্তিশালী এবং ভয়ংকর। তরুণরা তাদের শক্তি এবং সাহস দিয়ে সমাজের পরিবর্তন আনতে পারে।
“তাজা তাজা প্রাণে অসহ্য যন্ত্রণা”এই বয়সে তরুণরা সমাজের অন্যায়, অবিচার এবং বৈষম্য দেখে খুব কষ্ট পায়। তাদের মনে অনেক যন্ত্রণা এবং বেদনা থাকে।
“এ বয়সে প্রাণ তীব্র আর প্রখর”এই বয়সে তরুণদের আবেগ এবং অনুভূতি খুব তীব্র হয়। তারা সবকিছুকে খুব গভীরভাবে অনুভব করে।
“এ বয়সে কানে আসে কত মন্ত্রণা”এই বয়সে তরুণরা নানা রকম মতবাদ, তত্ত্ব এবং পরামর্শ শোনে। তারা ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখে।
“আঠারো বছর বয়স যে দুর্বার”
“পথে প্রান্তরে ছোটায় বহু তুফান”
আঠারো বছর বয়সটি খুব শক্তিশালী এবং অদম্য। 
এই বয়সে তরুণরা জীবনের পথে অনেক ঝড় এবং ঝঞ্ঝাটের সম্মুখীন হয়। তারা নানা রকম সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।
“দুর্যোগে হাল ঠিক মতো রাখা ভার”এই বয়সে তরুণদের জন্য জীবনের সব সমস্যা এবং দুর্যোগ মোকাবিলা করা খুব কঠিন। কিন্তু তারা সাহসের সাথে সবকিছু অতিক্রম করে।
“ক্ষত-বিক্ষত হয় সহস্র প্রাণ”এই বয়সে তরুণরা অনেক কষ্ট এবং যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়। তাদের প্রাণ অনেক আঘাত পায়, কিন্তু তারা হাল ছাড়ে না।
“আঠারো বছর বয়সে আঘাত আসে অবিশ্রান্ত”এই বয়সে তরুণরা অবিরাম আঘাত এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাদের জীবনে নানা রকম বাধা এবং বিপত্তি আসে।
“একে একে হয় জড়ো”এই বয়সে তরুণরা একের পর এক সমস্যা এবং আঘাতের সম্মুখীন হয়। তাদের জীবনে অনেক কষ্ট এবং যন্ত্রণা জমা হয়।
“এ বয়স কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাসে”এই বয়সে তরুণরা অনেক ব্যর্থতা এবং হতাশার সম্মুখীন হয়। তাদের মনে অনেক দীর্ঘশ্বাস এবং কষ্ট থাকে।
“এ বয়স কাঁপে বেদনায় থরোথরো”এই বয়সে তরুণরা অনেক বেদনা এবং যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়।
“তবু আঠারোর শুনেছি জয়ধ্বনি”তরুণরা সব বাধা অতিক্রম করে জয়লাভ করে। তাদের সাহস এবং সংগ্রামের জন্য তারা বিজয়ী হয়।
“এ বয়স বাঁচে দুর্যোগে আর ঝড়ে”তরুণরা জীবনের সব দুর্যোগ এবং ঝড়কে অতিক্রম করে বেঁচে থাকে।
“বিপদের মুখে এ বয়স অগ্রণী”এই বয়সে তরুণরা বিপদ এবং সমস্যার মুখে সামনে থেকে লড়াই করে। তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
“এ বয়স তবু নতুন কিছু তো করে”তরুণরা সব বাধা অতিক্রম করে নতুন কিছু সৃষ্টি করে। তারা সমাজের জন্য নতুন কিছু করার চেষ্টা করে।
“এ বয়স জেনো ভীরু, কাপুরুষ নয়”এই বয়সে তরুণরা ভীরু বা কাপুরুষ নয়। তারা খুব সাহসী এবং সংগ্রামী।
“পথ চলতে এ বয়স যায় না থেমে”তরুণরা জীবনের পথে চলতে চলতে কখনো থামে না। তারা সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যায়।
 “এ বয়সে তাই নেই কোনো সংশয়”এই বয়সে তরুণদের মনে কোনো সংশয় বা সন্দেহ থাকে না। তারা তাদের লক্ষ্যে অটল থাকে।
“এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে”কবি চান যে, এই তরুণদের সাহস এবং শক্তি দেশের উন্নতি এবং প্রগতির জন্য কাজ করুক। তারা দেশের জন্য নতুন কিছু সৃষ্টি করুক।

Related Posts

Leave a Comment